১৪২৩ সালের পহেলা বৈশাখে বৃহস্পতিবার সকাল বেলা চন্দ্রিমা উদ্যানে সাজসাজ রব। উচ্ছাসের জোয়ার ছড়িয়ে পড়ছে চতুর্দিকে। তবে কি পথশিশুরা বঞ্চিত হবে এই উৎসব থেকে? না তা হতেই পারে না। উচ্ছ্বাস, আনন্দ, আর খুশির ছোঁয়া ছড়িয়ে পড়েছিল পথশিশুদের মাঝেও। চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের মাজারের পশ্চিম পাশে বৃক্ষের নিচে ছায়াময় পরিবশে শুরু হয় এই উৎযাপন উৎসব। আশেপাশে রোদ থাকলেও বৃক্ষের ছায়ায় শান্তি, শীতল আর বৈশাখের বাতাসে হৃদয়ে জুড়িয়ে আসে, এতো চমৎকার পরিবেশ।
প্রার্থনার পর সকালের নাস্তা দিয়েই শুরু হয়েছিল পহেলা বৈশাখ উৎযাপনের প্রথম মুহুর্ত। তারপর শিশুরা নববর্ষের ঐতিহ্যমূলক ছবি আকাঁ থেকে শুরু করে ম্যাচ দিয়ে তৈরী বিভিন্ন দ্রব্য এবং ছবি রঙে মেতে উঠলো। শুধু কি আঁকলেই হবে? অঙ্কিত ছবিগুলো কেটে স্বেচ্ছাসেবীদের সহায়তায় আস্ত চারটা দেয়ালিকা তৈরী করে তবেই ক্ষান্ত হলো এই পর্ব। তারপর মহাসমারোহে বালিশ খেলায় আয়োজন করা হয়। শিশুদের সে কি উচ্ছ্বাস! আর আনন্দ! যেন চন্দ্রিমা উদ্যানে অসংখ্য ছোট পরী আর ফেরেশতাদের আসর বসে ছিলো। আনন্দের এই ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছিল আশাপাশের মানুষজনের কাছেও। প্রতিযোগিতামূলক এই খেলায় তিনজনকে পুরস্কারও প্রদান করা হয়।
তারপর ঘূর্ণি তৈরী করার পদ্ধতি শেখানো হয়। স্বেচ্ছাসেবীদের সহায়তায় সব শিশুদের জন্য একটি ঘূর্ণি তৈরী করা হয়।
ঘূর্ণিগুলো যখন ফুরফুরে বাতাসের স্পর্শে ঘুরছিলো সে কি মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। প্রাণ জুড়িয়ে আসে। তারপর শিশুদের গান, কবিতা আবৃত্তি, ছড়া নিয়ে এক মনোমুগ্বকর পর্বের সূচনা হয়। তারপর শুরু হয় দুপুরের খাবারের প্রস্তুতি। আবারো দেশ, জাতি, অসহায় ও বঞ্চিত মানুষদের কল্যাণ কামনা করে প্রার্থনা দিয়ে খাবারের সূচনা হয়। তারপর রেলী দিয়ে শেষ করা হয় পহেলাবৈশাখ উদযাপন অনুষ্ঠান।
নববর্ষে আমাদের প্রত্যাশা পথশিশু মুক্ত বাংলাদেশ রচনা। যেখানে সহনশীলতা, ভালোবাসা, সম্প্রীতি, আদর, স্নেহ ছড়িয়ে দিয়ে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে একটি সুন্দর আগামী গড়ে তোলা হবে। আমরা আরো বেশী সেবা এবং ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে চাই। ঐ যে নববর্ষের প্রভাতের সূর্যের রক্তিম আভা গড়িয়ে পড়ছে। সুতরাং এখনই ভালোবাসা, সম্প্রীতি, সহনশীলতা, সহিষ্ণুতা, একতা, মানবতাবোধের বীজ বপনের প্রকৃত সময়। তবে আর দেরী কেন? আপনিও ভালোবাসার এই স্রোতে শামিল হোন।
ধন্যবাদ সবাইকে।